ব্রেকিং নিউজ

Tuesday, June 30, 2020

5:36 PM

তাকসিমে সাবয়ীর অসারতা

তাকসিমে সাবয়ী এর পরিচয়:

 তাকসিমে সাবয়ী এর অর্থ হলো, সাত প্রকারে বিভক্ত করণ। সহীহ হাদীস সাত প্রকার এবং প্রত্যেক উপরের প্রকার নীচের প্রকারের চেয়ে তুলনামূলক বেশি সহীহ। প্রকারগুলো এই-
এক. যে হাদীস সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম উভয় কিতাবে আছে।
দুই. যে হাদীস শুধু সহীহ বুখারী শরীফে আছে।
তিন. যা শুধু সহীহ মুসলিমে আছে।
চার. যা সহীহ বুখারী ও মুসলিমে নেই তবে এই দুই কিতাবের মানদন্ডে সহীহ।
পাচ. যে হাদীস শুধু বুখারীর মানদন্ডে সহীহ।
ছয়. যা শুধু মুসলিমের মানদন্ডে সহীহ।
সাত. যে হাদীস বুখারী মুসলিমেও নেই, না এই দুই কিতাবের মানদন্ডে সহীহ। তবে অন্য কোনো ইমাম এক সহীহ বলেছেন। 

তাকসিমে সাবয়ীর আবিষ্কারক:

মুহাদ্দিস ইবনুস সালাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি সর্বপ্রথম তাকসিমে সাবয়ীর এই ধারণা প্রকাশ করেন। হিজরী সপ্তম শতাব্দীতে সহীহ হাদীসের এই প্রকারভেদ আবিষ্কার হওয়ার পর অনেক লেখক স্বীয় কিতাবে তা উল্লেখ করেছেন।
তাকসীমে সাবয়ীর অসারতা:
অনেক মুহাক্কিক আলেম বাস্তবতার বিচারে বলেছেন, এই প্রকারভেদ হাদীসের উসূলের আলোকে সহীহ নয়। কেননা, সহীহ হাদীসের প্রকার ও পর্যায় নির্ধারিত হয় হাদীস সহীহ হওয়ার শর্ত ও বৈশিষ্টের ওপর ভিত্তি করে, বিশেষ কোনো কিতাবে থাকা না থাকার ভিত্তিতে নয়।
তাকসিমে সাবয়ী
মুফতি রেজাউল করিম
যেমন অনেক হাদসি শুধু সহীহ বুখারীতে আছে মুসলিমে নেই কিন্তু তার সনদ মুসলিমের মানদন্ডেও সহীহ। এ ধরণের হাদীসকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে নেওয়ার কোনো অর্থ হয় না। তেমনি কোনো হাদীস বুখারী শরীফে নেই তবে শুধু মুসলিম শরীফে আছে কিন্তু তার সনদ ইমাম বুখারীর নিকটও সহীহ। এ হাদীসকে তৃতীয় শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত করা কি অর্থহীন নয়? তেমনি ভাবে যেসব হাদীস উভয় ইমামের মানদন্ডে সহীহ সেগুলোকে কি শুধু এই দুই কিতাবে না থাকার কারণে চতুর্থ শ্রেণীতে চলে যাবে।

আরো পড়ুন করোনা পরিস্থিতিতে জামাতের নামাজে এক মুসল্লি অপর মুসল্লি থেকে দূরত্বে দাঁড়াতে পারবে কিনা?

যারা এ তাকসিমে সাবয়ীর সমালোচনা করেছেন:

এই প্রকারভেদকে শাস্ত্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করা যায় না। তাই অনেক আহলে ইলম এই তাকসিমের কঠোর সমালোচনা করেছেন। যেমন হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন,
اما لو رجح قسم علي ما فوقه بامور أخري تقتضي الترجيح فانه يقدم علي ما فوقه
 اذ قد يعرض للمفوق ما يجعله فاءقا
অর্থাৎ অগ্রগণ্যতার অন্যান্য কারণে কোনো প্রকার যদি তা উপরস্থ প্রকারের চেয়ে অগ্রগামী হয় তাহলে তাকে তার উপরের প্রকারের চেয়ে অগ্রগণ্য করা হবে। কারণ, এই বিন্যাসে উল্লিখিত নিচের প্রকারের বর্ণনার সাথে কখনো কখনো এমন গুণাবলী যুক্ত হয়, যা তাকে উপরের পর্যায়ের বর্ণনার সমকক্ষ বা অগ্রগণ্য করে। [ শরহু নুখবাতিল ফিকার-৩২]
আল্লামা ইবনুল হুমাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাকসীমে সাবয়ী প্রত্যাখান করতে গিয়ে বলেন,
وقول من قال: اصح الاحاديث ما في الصحيحين ثم ما انفرد به البخاري ثم ما انفرد به مسلم ثم ما اشتمل علي شرطهما من غيرهما ثم ما اشتمل علي شرط احدهما : تحكم لا يجوز التقليد فيه
অর্থাৎ যারা বলেন যে, অধিক বিশুদ্ধ হাদীস হলো, যে হাদীস সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম দুই কিতাবেই আছে। যা শুধু সহীহ মুসলিমে আছে । যা এই দুই কিতাবে নেই তবে এই দুই কিতাবের মানদন্ডে সহীহ। যা শুধু বুখারীর মানদন্ডে সহীহ। যা শুধু মুসলিমের মানদন্ডে সহীহ। যা না এই দুই কিতাবে আছে না এই দুই কিতাবর মানদন্ডে সহীহ। তবে অন্য কোনো ইমাম একে সহীহ বলেছেন। এটা হটকারীতা এর তাকলীদ বা অনুসরণ করা জায়েয নেই। [ ফাতহুল কাদীর ১/২৮৮-২৮৯]


আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ূতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিস্কার লিখেছেন যে,
اطلاق اصح الاسانيد علي بعض الاسانيد او يصح ذلك من حيث المجموعية دون كل فرد فرد من الاحاديث
 অর্থাৎ সহীহ মুসলিমের তুলনায় সহীহ বুখারী অধিক সহীহ হওয়ার অর্থ হলো, সমষ্টিগত বিচারে অধিক সহীহ হওয়া। এই নয় যে, সহীহ বুখারীর প্রতিটি হাদীস সহীহ মুসলিমের প্রতিটি হাদীসের চেয়ে অধিক সহীহ। [তাদরীবুর রাবী ১/৮৮)
আল্লামা যারকাশী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন, অগ্রগণ্যতার কারণ বিচারে মুহাদ্দিসগণ কখনো কখনো সহীহ মুসলিমের হাদীসকে বূখারীর হাদীসের উপর প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

ইমাম আবু বকর হাযেমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এক হাদীসকে অন্য হাদীসের উপর প্রাধান্য দেওয়ার পঞ্চাশটি কারণ উল্লেখ করেছেন। সেসব ‘প্রাধান্য দেওয়ার কারণসমূহের’ মধ্যে বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হাদীস যে প্রাধান্য পাবে তার উল্লেখ নেই। বরং তিনি বলেছেন  এক হাদীস অন্য হাদীসের উপর প্রাধান্য পায় রাবীর গ্রহণযোগ্যতার কারণে। হাদীসটি কোন কিতাবে বর্ণিত হয়েছে সে বিবেচনায় নয়।
[আল ই’তিবার ফিন নাসিখ ওয়াল মানসুখ-৫৮-৯০]
হাফেয ইরাকি রহমাতুল্লাহি আলাইহি একশত দশটি “উজুহে তারজীহ” উল্লেখ করেছেন। তম্মধ্যে বুখারী মুসলিমের হাদীসকে ১১০ নাম্বারে গণ্য করেছেন।
আব্দুর রশীদ নুমানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হাফেয ইবনুস সালাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর পূর্বে তাকসীমে সাবয়ীর প্রবক্তা কেউ ছিলো না। তার পরবর্তীতে কেউ কেউ তার অনুসরণ করেছেন। কিন্তু হাফেয ইমাদুদ্দিন ইবনে কাসির রহমাতুল্লাহি আলাইহি “ইখতিসার ফি উলুমুল হাদীসে” তাকসীমে সাবয়ীর উল্লেখ করেননি। এর দ্বারা বুঝা যায় তিনি এর অনুসরন করেননি। বরং তিনি স্পষ্ট ভাবে বলেছেন, ‘মুসনাদে ইমাম আহমাদে’ এমস সনদ ও মতন রয়েছে যা বুখারী মুসলিমের সমপর্যায়ের। যা ইমাম বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেননি। এমনকি আইম্মায় আরবায়া ও বর্ণনা করেননি।

Saturday, June 27, 2020

10:55 AM

ফতোয়া প্রদানে সতর্কতা : মুফতি তকী উসমানী

ফতোয়া প্রদানে সতর্কতা অবলম্বন : মুফতি তকী উসমানী,ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি
মুফতি তকী উসমানী
মুফতির দায়িত্ব তো অনেক বড় একটি দায়িত্ব। এটি এমন বড় এক দায়িত্ব যে, আল্লামা ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং আল্লামা ইবনুল কাইয়ুম রহমাতুল্লাহি আলাইহি একে “আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অনুমোদন” বলে আখ্যায়িত করেছেন। যখন কোনো মুফতি ফতোয়া দেন, তখন তিনি যেন বাস্তবে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সে ফতোয়ায় সাক্ষর করেন।

কোনো বিষয় হালাল নাকি হারাম এ বিষয়ে কেউ জিজ্ঞেসিত হলে, আল্লাহ তায়ালা বলেন,এটা তার দায়িত্ব নয় যে, তিনি 
নিজ থেকে এটা বলে দিবেন যে, এটা হালাল বা হারাম। এটাতো আসলে আল্লাহ তায়ালার কাজ। কোনো বিষয় সম্পর্কে আমরা যদি এটা বলে দেই যে, এ বিষয়টি শরীয়তে হালাল । তাহলে মূলত আমরা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তার প্রতিনিধি হয়েই যেন তা বলি। এটাই হলো, “ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সাক্ষর বা অনুমোদন করা”।


ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর মত এত বড় মানুষ এ ব্যাপারে কতটা সতর্ক ছিলেন দেখুন। “ আমি ফাতহুল বুইয়ু ও তাকমিলায় ফাতহুল মুলহিম লিখতে গিয়ে চারো মাযহাবের ফিক্বহের কিতাবগুলো অধ্যয়নের চেষ্টা করেছি। যে পরিমাণ যাচাই-বাছাই , তাহকীক ও গবেষণা  ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহির মাযহাবে আমি দেখেছি তা অন্য কোনো মাযহাবে আমি পাইনি”। 
তার মাযহাবে যত শাখাগত মাসয়ালা আমার চোখে পড়েছে অন্য কোনো মাযহাবে আমার চোখে তা পড়েনি। তা
সত্তেও ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমার সমকালীন ৭০ জন আলেম আমাকে অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত আমি ফতোয়া প্রদান শুরু করিনি। যখন ৭০ জন আলেম আমাকে এ কথা বলে দিলেন যে, এখন তুমি ফতোয়া দিতে পারো। তখন আমি ফতোয়া দেওয়া শুরু করলাম।

ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি এত বড় আলেম হওয়া সত্তেও কখনো ‘আমি জানি না’ বলতে লজ্জাবোধ করতেন না। তার এক ছাত্র বলেন, একদা আমি ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর কাছে বসা ছিলাম। একের পর এক লোকজন এসে ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে বিভিন্ন বিষয় জিজ্ঞাসা করছিলো। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি জানি না, আমি জানি না’। তিনি প্রশ্নের সংখ্যা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন যে, অধিকাংশ মাসয়ালার ক্ষেত্রে ইমাম মালেক বলেছেন ‘আমি জানি না’।


অথচ আল্লাহ তায়ালা ইমাম মালেকের মাধ্যমে এত কাজ আঞ্জাম দিয়েছেন যে, তা গণনা করা সম্ভব নয়। একবার এক ব্যক্তি কোনো প্রশ্নের বিষয়ে তাকে বললেন যে, এটাতো একদম সহজ একটি মাসয়ালা। তখন ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, “ ফিক্বহের মধ্যে সহজ বা হালকা বলতে কোনো কিছু নেই”।

এ জন্য কোনো বিষয়ে নিশ্চিত জ্ঞান অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা এর উত্তর দিতে পারি না। জ্ঞানের এত বড় সমুদ্র হওয়া সত্তেও ফতোয়া প্রদানের ক্ষেত্রে ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর সতর্কতার অবস্থা ছিলো এই। আল্লাহ তায়ালা স্বীয় রহমত দ্বারা আমাদের ( সতর্কতা অবলম¦ন না করেই ফতোয় প্রদানের) এই মুসিবত থেকে হেফাযত করুন।


বুযুর্গানে দ্বীন বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি কোনো মুফতি সাহেবের কাছে কোনো বিষয়ে ফতোয়া জানতে চান। তখন এই প্রশ্নকারী যেন উত্তরদাতা মুফতি সাহেবকে প্রশ্নকারী নিজের ও জাহান্নামের মাঝে একটি মাধ্যম বানিয়ে নেয়।
সে এটি ঠিক করে নেয় যে, বিষয়টির কারণে আমি জাহান্নামে যাবো না। বরং এ বিষয়টিকে হালাল বা হারাম বলে দেওয়ায় এর সব দায় দায়িত্ব মুফতি সাহেবের কাধে বর্তাবে। ভুল ত্রুটি যা হবে আল্লাহর কাছে মুফতি সাহেব জবাবদিহিতা করবেন।

আব্বাজান মুফতি শফী রহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে শুনেছি, ইমাম মুহাম্মাদ বিন হাসান শায়বানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো যে, আমরা সব সময় আপনাকে চিন্তিত অবস্থায় দেখি। অন্য লোকদের যেমন হাসি খুশি দেখি আপনাকে তেমন দেখি না কেনো? ইমাম মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, ওই ব্যক্তির অবস্থা আর কী হতে পারে যার কাধকে মানুষ জান্নাত জাহান্নামে যাওয়ার জন্য সেতু বানিয়েছে ? ভুল ত্রুটির সমস্থ দায়ভার ওই লোকের কাধে ছেড়ে দিয়ে সেই কাধকে মানুষ সেতু বানিয়ে জান্নাত জাহান্নামে যায়? 


এক দিকে এই ছিলো ফতোয়া প্রদানের ক্ষেত্রে এ ইমামগণের সতর্কতার অবস্থা। ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর সতর্কতার অবস্থা। ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলতেন, যখনই কোনো ব্যক্তি আমাকে কোনো মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করে তখন আমি অল্প সময়ের জন্য জান্নাত ও জাহান্নামের দুটোর সামনেই পেশ করি।

আমি চিন্তায় পড়ে যাই যে, এই প্রশ্নের উত্তর আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে নাকি জাহান্নামে নিয়ে যাবে। সতর্কতার অবস্থা ছিলো এই । অথচ আজ কাল ফতোয়া প্রদানকে এমন তুচ্ছ বিষয় বানিয়ে ফেলা হয়েছে যে, প্রত্যেকেই মুফতি সাহেব সাজতে প্রস্তুত। আর বলতে চায় এটা আমার মত, এটা আমার ফতোয়া। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হেফাযত করুন।

Friday, March 20, 2020

8:48 AM

করোনা থেকে বাঁচতে সতর্কতার পাশাপাশি যেসব আমল করবেন: মুফতি মনসূরুল হক




১. সর্বপ্রথম নিজের ঈমান আমলকে সংশোধন করা। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-

وَمَا كَانَ رَبُّكَ لِيُهْلِكَ الْقُرَى بِظُلْمٍ وَأَهْلُهَا مُصْلِحُونَ অর্থ : আর আপনার রব এমন নন যে, তিনি জনপদসমূহকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দেবেন অথচ তার অধিবাসীরা সৎকর্মে লিপ্ত রয়েছে। (সূরা হুদ : ১১৭)

২. দুই নম্বর কাজ হলো-আকীদা সহীহ করা। পবিত্র কুরআনে কারীমে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

قُلْ لَنْ يُصِيبَنَا إِلَّا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ অর্থ: হে নবী! আপনি বলে দিন! আল্লাহ আমাদের জন্য (তাকদীরে) যা লিখে রেখেছেন তা ছাড়া অন্য কোনো কষ্ট আমাদেরকে কিছুতেই স্পর্শ করবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক। আর আল্লাহর উপর মুমিনদের ভরসা করা উচিত। (সূরা তাওবা; আয়াত ৫১)

কাজেই যে কোনো বালা-মুসীবত ও মহামারিতে মুমিন বান্দার প্রথম কাজ হলো নিজের আকীদা বিশ্বাস দৃঢ়
করা যে, আল্লাহ তাআলা যদি আমার তাকদীরে লিখে রাখেন, তবে তা কোনভাবেই আটকানো সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে

আল্লাহ তাআলাই আমাকে সুস্থতা দান করবেন, মারা গেলে ‘শহীদ’ এর মর্যাদা তথা বিনা হিসেবে জান্নাত
দান করবেন। আর যদি আমার তাকদীরে এ রোগ না লিখে থাকেন, তবে এ রোগ আমার কক্ষনো হবে না।
এর পাশাপাশি এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, করোনা ভাইরাস কোনো রোগ ছোঁয়াচে রোগ নয়। বরং আল্লাহ
তাআলা তাকদীরে রেখেছেন-এ জন্য হয়েছে। হাদীসে পাকে ইরশাদ হয়েছে-নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেন- ولا عدوى،অর্থাৎ ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই!’ এক সাহাবী জিজ্ঞাসা করলেন যে, ইয়া
রাসূলুল্লাহ! আমরা একটি খুজলিযুক্ত বকরী অন্যান্য (সুস্থ) বকরীর মাঝে রেখে দিলে সেগুলোও তো খুজলি রোগে

আক্রান্ত হয়ে যায়! নবীজী বললেন, ‘ فمن أعدى الأول ‘তাহলে প্রথম বকরীটি কী কারণে আক্রান্ত হলো?’ অর্থাৎ
প্রথম বকরীটি যেভাবে আল্লাহর হুকুমে আক্রান্ত হয়েছে, তেমনি অন্যগুলোও আল্লাহর হুকুমে আক্রান্ত হয়েছে।
(মুসনাদে আহমাদ; হা.নং ৩০৩১)

৩. বেশি বেশি ইস্তেগফার করা তথা আল্লাহর কাছে নিজ গোনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া। পবিত্র কুরআনে মহান
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنْتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللَّهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ অর্থ : এবং (হে নবী!) আল্লাহ এমন নন যে, আপনি তাদের মাঝে বর্তমান থাকা অবস্থায় তাদেরকে শাস্তি দেবেন এবং তিনি এমনও নন যে, তারা ইস্তিগফারে রত থাকা অবস্থায় তাদেরকে শাস্তি দেবেন। (সূরা আনফাল : ৩৩)

৪. এ দু‘আটি বেশি বেশি পাঠ করা- لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ অর্থ : (হে আল্লাহ!) আপনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আপনি সকল ত্রুটি থেকে পবিত্র। নিশ্চয়ই আমি অপরাধী (সূরা আম্বিয়া ৮৭)

৫. বাদ ফযর ও বাদ মাগরিব তিন তিনবার নিম্নোক্ত দু‘আ দুটি পড়া- بِسْمِ اللهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ অর্থ : আল্লাহর নামে, যার নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো বস্তু ক্ষতিসাধন করতে পারে না। আর তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী! (মুসনাদে আহমাদ; হা.নং ৪৪৬)

أعوذ بكلمات الله التامات من شر ما خلق উচ্চারণ : আউযুবিকালিমাতিল্লাহিত্ধসঢ়; তাম্মা-তি মিন শাররি মা খলাক্ব। অর্থ : আমি আল্লাহর কাছে তার পরিপূর্ণ ‘কালেমা’র মাধ্যমে সকল সৃষ্টিজীবের অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। (মুসনাদে আহমাদ; হা.নং ৭৮৯৮)

৬. নিম্নোক্ত দুআটি বেশি বেশি পাঠ করা- اللهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ، وَالْجُنُونِ، وَالْجُذَامِ، وَمِنْ سَيِّئِ الْأَسْقَامِ অর্থ: হে আল্লাহ! আমি শে^ত রোগ, উম্মাদনা, কুষ্ঠ রোগ এবং সকল প্রকার দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। (মুসনাদে আহমাদ; হা.নং ১৩০০৪)

৭. দিনে যে কোনো সময়ে সূরা ফাতিহা তিনবার, সূরা ইখলাস তিনবার, এবং নিম্নোক্ত দুআটি ৩১৩ বার পড়া- حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ অর্থ : আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। আর তিনি অতি উত্তম অভিভাবক। (সূরা আলে ইমরান; আয়াত ১৭৩)

৮. দিনে যে কোনো সময়ে নিজ পরিবারে সম্মিলিতভাবে সীরাতুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবের তা‘লীম করা। এটা একটা পরীক্ষিত আমল। নিকট অতীতে হিন্দুস্তানে
একবার এক মহামারি দেখা দেয়। তখন হযরত আশরাফ আলী থানভী রহ. এ মহামারি থেকে বাঁচার জন্য
‘নাশরুত তীব’ নামে সীরাতগ্রন্থ লেখা শুরু করেন। এ সীরাতের বরকতে আল্লাহ তাআলা মহামারি উঠিয়ে
নেন!

নির্ভরযোগ্য সীরাতের কিতাব যেমন সাইয়্যেদ আবুল হাসান নদবী রহ. রচিত কিতাব ‘নবীয়ে রহমাত’
(বাংলা), মুফতী শফী রহ.কৃত ‘সীরাতে খাতামুল আম্বিয়া সা. (বাংলা)।

আতঙ্ক নয়, সতর্ক হই, সচেতন হই, গুনাহ বর্জন করি।

Wednesday, March 18, 2020

7:41 PM

করোনা ভাইরাস: ইতালিতে একদিনে ৪৭৫ জন মৃত্যুর রেকর্ড

করোনা ভাইরাসে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন আরও ৪৭৫ জন। এখন পর্যন্ত যেকোনও দেশে করোনায় একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। খবর: বিবিসি।

করোনা ভাইরাসে চীনের পর বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ইতালি। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪ হাজার ২০৭ জনের শরীরে এনসিওভি-১৯ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৭১৩ জন। এদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৯৭৮ জন।



আরও পড়ুন:
করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে মুফতি রেজাউল করিমের পরামর্শ

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরেই অবরুদ্ধ গোটা ইতালি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে। জনগণকে আপাতত বাড়ির বাইরে বের না হতে অনুরোধ জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

এ পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ১৭০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এতে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ২ লাখ ১২ হাজার ৮৭০ জন। প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭৮৯ জন। এ পর্যন্ত ৮৪ হাজারের বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসার মাধ্যম সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

আরও পড়ুন:
স্ত্রী সহবাসের পর তৎক্ষণাৎ গোসল এবং কিছু ভুল ধারণা


Monday, March 16, 2020

11:53 PM

হাইআতুল উলয়ার পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে



কওমী মাদরাসাসমূহের সম্মিলিত শিক্ষাবোর্ড হাইআতুল উলয়ার  পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে মাদরাসায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ছাত্ররা নিজ নিজ কক্ষে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করবে।  আজ সকালে  হাইআতুল উলয়ার কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলবৃন্দের বৈঠকে এ সকল সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেফাকুল মাদারিসের সহ সভাপতি মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু।

মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু বলেন, করোনা ভাইরাস এটা আল্লাহর পরীক্ষা। মুমিনদের জন্যে রহমত, আর কাফেরদের জন্যে আযাব। সুতরাং আমাদেরকে আল্লাহর দিকে তাওবা ইস্তিগফার ও নেক কাজের মাধ্যমে রুজু করতে হবে।

হাইআর পরীক্ষা সম্পর্কে তিনি জানান, মাদরাসায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। দরস বন্ধ থাকবে। তবে  ছাত্ররা নিজ নিজ কক্ষে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। সেই প্রস্তুতি কেউ চাইলে বাসায়ও গ্রহণ করতে পারে। তবে পরীক্ষা যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার থেকে রক্ষা পেতে দেশের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
11:37 PM

কিস্তিতে ক্রয় বিক্রয়ের শরয়ী সমাধান





প্রশ্ন: কিস্তিতে পণ্য ক্রয় করার কারণে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হলে তা কি সুদ হবে? যেমন, একটা মোবাইল কিস্তিতে ক্রয় করার কারণে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়েছে।  আসলে এটা কি সুদ?

মোহাম্মাদ বেলাল
বেড়ের মাঠ, মহেশপুর

উত্তর: ইসলামের দৃষ্টিতে কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয় করা বৈধ এবং কিস্তিতে পণ্য ক্রয়ের কারণে নগদ মূল্যের অতিরিক্ত মূল্য নেয়া সর্বসম্মতভাবে বৈধ। এটি সুদ নয়। এ ব্যাপারে চার মাজহাবের ইমাম সহ অধিকাংশ আলেমগণ একমত। কারণ এখানে দুটি ভিন্ন ভিন্ন জিনসের মধ্যে কমবেশি হচ্ছে (টাকার বিনিময়ে মোবাইল)।
তবে ইসলামের বিধান অনুযায়ী সুদ তখন হবে যখন এক জাতীয় দুটি জিনিস লেনদেনের ক্ষেত্রে কম-বেশী করা হয়-চাই নগদে হোক অথবা বাকিতে হোক। যেমন: ১০ কেজি গমের পরিবর্তে ১১ কেজি গম নেয়া, ১০০০ টাকার পরিবর্তে ১১০০টাকা নেয়া ইত্যাদি।

আরো পড়ুন
করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে মুফতি রেজাউল করিমের পরামর্শ

কিস্তিতে বিক্রয় করার সময় কখন বা কয় কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করা হবে তা নির্ধারণ করা আবশ্যক। কেননা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ وَهُمْ يُسْلِفُونَ فِي الثِّمَارِ السَّنَةَ وَالسَّنَتَيْنِ فَقَالَ ‏ “‏ مَنْ أَسْلَفَ فِي تَمْرٍ فَلْيُسْلِفْ فِي كَيْلٍ مَعْلُومٍ وَوَزْنٍ مَعْلُومٍ إِلَى أَجَلٍ مَعْلُومٍ‏”‏ ‏

আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মদিনায় আগমনকালে মদিনাবাসীরা এক বা দুই বছর মেয়াদে বিভিন্ন প্রকার ফল অগ্রিম ক্রয় করত। তিনি বলেন, যে কেউ খেজুর অগ্রিম ক্রয় করবে, সে যেন নির্ধারিত পরিমাপে বা নির্ধারিত ওজনে এবং নির্ধারিত মেয়াদে ক্রয় করে। [সহীহ মুসলিম – ৩৯৭৩]‏

আর পণ্য নগদে হস্তান্তর করতে হবে। উভয়টি বাকি রাখা যাবে না। এ ছাড়া সময় মত মূল্য পরিশোধ না করলে বিলম্ব করার কারণে বিক্রয়ের সময় যে মূল্য ধার্য করা হয়েছিল তার চেয়ে দাম বাড়িয়ে নেওয়া জায়েয হবে না।

আরো পড়ুন
নানার আগে মা মারা গেলে নাতীরা নানা থেকে মিরাছ পাবে?

হযরত শুবা ইবনুল হাজ্জাজ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হাকাম ইবনে উতইবা এবং হাম্মাদ ইবনে আবু সুলাইমকে এক ক্রেতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সে অন্যের থেকে পণ্য ক্রয় করে আর বিক্রেতা তাকে বলে যে, নগত মূল্যে কিনলে এত টাকা আর বাকিতে কিনলে এত টাকা। (এতে কোন অসুবিধা আছে কি?)

তারা উভয়ে বললেন, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে যদি (মজলিস ত্যাগ করার পূর্বে) কোন একটি (মূল্য) চূড়ান্ত করে নেয় তা হলে এতে কোন অসুবিধা নেই। সূত্র: মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা হাদীস নং ২০৮৩৬, জামে তিরমিযী ১/১৪৭, মাবসূত ১৩/৮, রদ্দুল মুহতার ৫/১৪২, মাআশী মাসায়েল ৫৩


আপনি জানতে পারেন আপনার সমস্যার শরয়ী সমাধান
যোগাযোগ: 01782409169
ইমেইল: rezua1995@gmail.com

Friday, February 28, 2020

3:18 AM

দিল্লিতে মুসলিম গণহত্যা বন্ধ এবং মোদির সফর বাতিল করতে হবে: ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশে আল্লামা কাসেমী




দিল্লিতে মুসলিম গণহত্যা বন্ধ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির বাংলাদেশ সফর বাতিলের দাবিতে সমমনা ইসলামী ৬টি দল আজ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে বিশাল এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ভারতে নতুন নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জি তৈরির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদের কারণে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের উপর উগ্রবাদী হিন্দুরা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছ। ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বেশ কয়েক দিন ধরে পদ্ধতিগত মুসলিম গণহত্যা চললেও দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আদালত, রাজ্য সরকার; কেউই তা থামাতে কার্যকর কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। তাছাড়া দিল্লীতে একের পর মসজিদে হামলা চলছে। সেখানে মসজিদের মিনারগুলোতে হিন্দুধর্মীয় প্রতীক স্থাপন করা হচ্ছে। যা মুসলমানদের ঈমান-বিশ্বাস-অনুভূতির প্রতি চরম অবমাননাকর। এটা মুসলিম বিশ্ব নিরবে সহ্য তরতে পারে না।

ভারতের দিল্লীতে মুসলিম গণহত্যা, মসজিদ মাদরাসা ও মুসলমানদের বাড়ী ঘরে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে আজ (৮ফেব্রয়ারি) শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে সমমান ইসলামী রাজনৈতিক দলসমূহ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমীর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড.আহমদ আব্দুল কাদের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহসভাপতি আল্লামা আব্দুর রব ইউসূফী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ে, খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, নায়বে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের মাসচিব মাওলানা মোস্তফা তারিকুল হাসান, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা ডা.আব্দুল করিম, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, জমিয়তের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, এনডিপি’র চেয়ারম্যান কেএম আবু তাহের, খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জমিয়তের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।




বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিশাল এক মিছিল বের করা হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী আরো বলেন, এই হত্যা চালানোর সময় বাংলাদেশের সরকারসহ বিশ্বসমাজ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ সরকার এই গণহত্যার জন্য প্রধানতম দায়ী ব্যাক্তি নরেন্দ্র মোদিকে শিগগির বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। যা এ মুহূর্তে বাংলাদেশের মুসলমান জনগোষ্ঠীর জন্য চরম উস্কানিমূলক। বাংলাদেশের মানুষ খুনি মোদিকে এই দেশে পা রাখতে দিবে না। প্রয়োজনে বিমানবন্দর ঘেরাও দিয়ে হলেও রুখে দিবে।

আল্লামা কাসেমী দিল্লিতে মুসলিম গণহত্যার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহনশীল ব্যবস্থাবিরোধী কোন উস্কানী যেন কেউ না দিতে পারে সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটূট রাখতে এবং ভারত সরকারের মুসলিমবিদ্বেষী অপতৎপরতার প্রতিবাদ জানাতে জালেম নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর অবশ্যই সরকারকে বাতিল করতে হবে। কারণ, দেশের শান্তিকামী মানুষ গুজরাটের কসাইখ্যাত দিল্লি গণহত্যার খলনায়ক নরেন্দ্রমোদিকে বাংলাদেশের মাটিতে কোনক্রমেই সহ্য করবে না।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ -এর সহসভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা আবদুর রব ইউসুফী বলেন, ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদি গোষ্ঠি সে দেশের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলমানদের উপর জুলুম নির্যাতনের যে নীল নকশা তৈরি ও বাস্তবায়ন করে চলেছে, তার বিরুদ্ধে বিশ্ব মানবাধিকার গোষ্ঠি, বিশেষ করে মুসলমানদের কঠোর প্রতিরোধ গড়ে না তুললে বিশ্ব পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করবে।

তিনি বলেন, বিশ কোটি মুসলিম অধ্যূষিত ভারতের মুসলিম নিধনে যদি হিন্দুত্ববাদিরা সফল হতে পারে, তাহলে বিশ্বের অন্যান্য অমুসলিম দেশও ভারতের পদাংক অনুসরণ করতে পারে। এক সময় হয়তো মুসলিম রাষ্ট্রসমূহে অবস্থানকারী হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়েও ঝুঁকি হতে পারেেে ৷